ইতিহাস:
গাফফার খান নামক জনৈক সেনানায়কের নামে গফরগাঁও নামের উৎপত্তি। ধারণা করা হয় মুঘল সেনাপতি রাজা মানসিংহ ও বাংলার বারো ভুঁইয়াদের নেতা ঈসা খানের সম্মুখ যুদ্ধটি ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষ্যা নদীর সম্মিলনস্থলে বর্তমান ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার সম্পূর্ণ দক্ষিণ প্রান্তের বাঁশিয়া গ্রামের মোঘল বাড়ী থেকে টাঙ্গাব গ্রামের সিমানা পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। গফরগাঁওয়ের ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪টি ইউনিয়ন ভাওয়াল পরগনাধীন এবং পূর্বাংশ চর আলগী ইউনিয়ন আঠারবাড়ি জমিদার প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল ঐতিহাসিক রণভাওয়াল (গফরগাঁও, ভালুকা, শ্রীপুর ও কাপাসিয়ার অংশবিশেষ তথা ভাওয়ালের উত্তরাংশের প্রাচীন জনপদ) জনপদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ১৮১৩ সালে গফরগাঁও থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে এর উপজেলা কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯১৭ সালে গফরগাঁয়ের পশ্চিমাংশ নিয়ে ভালুকা থানা সৃষ্টি করা হয়।
প্রশাসনিক এলাকা:
গফরগাঁও উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা, ২টি থানা ও ১৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। গফরগাঁও পৌরসভা ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত গফরগাঁও উপজেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। গফরগাঁও উপজেলা সদরের সালটিয়া ইউনিয়নের সালটিয়া, জন্মেজয়, ষোলহাসিয়া, রাঘাইচটি, শিলাসী ও নগর হোসনাবাদ মৌজার শহর এলাকা সমূহের সমন্বয়ে ২০শে জুলাই ১৯৯৯ ইং তারিখে ৫.৩৩ বর্গ কি.মি. এলাকা নিয়ে গফরগাঁও পৌরসভা গঠিত হয়। পৌরসভার উত্তরে সালটিয়া ইউনিয়ন, দক্ষিণে লংগাইর ইউনিয়ন, পূর্বে পাঁচবাগ ইউনিয়ন এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ ও পশ্চিমে রাওনা ইউনিয়ন। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ গফরগাঁও পৌরসভার উপর দিয়ে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর পৌরসভার পূর্ব দিকে বয়ে গেছে। পৌরসভার অভ্যন্তরে রেললাইন রয়েছে যা উত্তর দক্ষিণ বরাবর গিয়েছে। বর্তমানে গফরগাঁও পৌরসভায় সর্বমোট ০৯ টি ওয়ার্ড রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ২০১১ অনুযায়ী গফরগাঁও পৌরসভার মোট জনসংখ্যা ২৯৩২৫ জন। এর মধ্যে ১৪৬৯১ জন (৫০.১০%) পুরুষ এবং ১৪৬৩৪ জন (৪৯.৯০%) নারী। এলাকায় মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ও অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর লোকজনের বসবাস রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী পৌর এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব ২০০১ সালে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪০৭০ জন এবং ২০১১ সালে ৫০৯৩ জন। মোট পরিবারের সংখ্যা ৬৫১৩ জন।